ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

২৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৩ রমজান ১৪৪৬

তোলপাড় :সিমেবি`র ভিসি মোর্শেদ ও রেজি:র দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ১৯:০৫, ২৭ জুন ২০২৩

তোলপাড় :সিমেবি`র ভিসি মোর্শেদ ও রেজি:র দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে তোলপাড়: সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-রেজিস্ট্রারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা


সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মো. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. নাঈমুল হককে  ৬০ দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। 

গত ২২ জুন মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজ একিউএম নাছির উদ্দিন এই রায় প্রদান করেন।

এর আগে গত ২০ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই রায় দেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে গত রোববার।

রোববার সন্ধ্যায় সিলেটে দুদকের মামলার পিপি আলী মর্জুজা কিবরিয়া জানান, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। 

ইতোমধ্যে অভিযুক্তরা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করায় আদালতে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

২০১৮ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টিতে দেশের ৪র্থ সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পেলে নগরীর চৌহাট্টায় সিভিল সার্জন কার্যালয় সংলগ্ন স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। 

এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ গ্ইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীকে প্রথম ভিসি নিয়োগ দেওয় হয়। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ) নাঈমুল হক।

জানা গেছে, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী  ভিসি ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের যোগসাজশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও বিশ্ববিদ্যালয় আইন লঙ্ঘন করে বিভিন্ন পদে অ্যাডহক ভিত্তিতে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া শুরু করেন। 

২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়া অস্থায়ীভাবে ১০৯ জনকে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


অবৈধ নিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর ২০২১ সালের নভেম্বরে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউজিসি। কমিটির অনুসন্ধান অনুযায়ী ১০৯টি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে।


অভিযোগ আছে, তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী তার স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়া, রাজনৈতিক সুপারিশ, ইউজিসির কর্মকর্তাদের সুপারিশ, গণমাধ্যমকর্মীদের সুপারিশেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের দরখাস্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।


সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, ইউজিসির অনুমোদিত পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের পূর্বানুমতির প্রয়োজন হয়। এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভিসি ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অর্থের বিনিময়ে শতাধিক অ্যাডহক নিয়োগ দেন। 

এনিয়ে তখন তোলপাড় শুরু হয়। বিভিন্ন মিডিয়ায় খবরও প্রকাশ হয়। অভিযোগ ওঠে মিডিয়াকে ম্যানেজ করতে প্রভাবশালী মিডিয়ার  কতিপয় সাংবাদিকের আত্বীয় স্বজনকে নিয়োগ দেন ভিসি।

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রমের দিকে মনোযোগ না দিয়ে শীর্ষ দুই কর্মকর্তা অনিয়ম-দুর্নীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। 

এ বিষয়ে  ইউজিসির তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং তাতে ভিসি ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এরপর দুদক সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পায়।

সিলেট নিউজ ২৪

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন