ব্রেকিং
প্রকাশ: ০০:১৬, ১৯ মে ২০২৩
২০ দিনের অপেক্ষারপালা কাল শনিবার শেষ হচ্ছে। এদিকে সময়ও আর হাতে নেই। পরিস্হিতি কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছে মেয়র আরিফকে। প্রার্থী হলে ২১ মে পদত্যাগ করতে হবে। ২৩ মে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন।
এদিকে বিভিন্নমূখী চাপ বাড়ছে আরিফুলের উপর। তাই কী ঘোষনা দিবেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সর্বত্র। ২০ মে শনিবার পূর্ব ঘোষিত রেজিস্ট্রারী মাঠের সভাটি হবে তাঁর জন্য টার্নিং পয়েন্ট।
মে দিবসের শ্রমিক সমাবেশে সিটি নির্বাচন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন সিলেটের মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। ওইদিনই তিনি জানিয়েছিলেন, সিদ্ধান্ত জানাবেন ২০শে মে। এই ২০দিন আরিফ সার্বিক বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। নানা জনের মতামত নিয়েছেন। দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এখন তার মতামত দেয়ার পালা। এই মতামত মেয়র শনিবার সিলেটের রেজিস্ট্রারী মাঠে নগরের মানুষ ও দলের নেতাকর্মীদের সামনেই জানাতে চান। তবে প্রশ্ন হলো- মেয়র আরিফ কী সিদ্ধান্ত জানাবেন। এখনো এ ব্যাপারে তিনি মুখ খুলছেন না।
আকার-ইঙ্গিতের ভাষা হ্যাঁ, না দুটিই। কোন সূত্রই নিশ্চিত করতে পারছেনা আসলে কী সিদ্ধান্ত জানাবেন। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ও সিটির ৪ নং ওয়ার্ডের ৪ বারের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। মেয়র আরিফের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন সিলেটের বিএনপি দলীয় কাউন্সিলররাও।
ধারণা করা হচ্ছে মেয়র আরিফ নির্বাচন করতে পারেন, আবার না-ও করতে পারেন। আরিফ সরে গেলে লড়াই করার মতো অন্য কোনো প্রার্থীর উপস্থিতি সিলেটে নেই। সেটিও এখন ভাবাচ্ছে তাকে। বিকল্প প্রার্থী থাকলে তার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজ হতো বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্টজনরা।
দলীয় সিদ্বান্ত তার জন্য গলার কাঁটা। সিলেট বিএনপিতে তার বিরোধীরাও দলের সিদ্বান্ত বাস্তবায়নে উঠেপড়ে লেগেছে। তাদের কর্মকাণ্ড কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দিয়েছে মেয়র আরিফকে। তবে যে সিদ্ধান্তই নেবেন তার সমর্থিত বিএনপি’র অংশের নেতারা মাঠে থাকবেন। আরিফকে ফেলে তারা যাবেন না- এমন কথা তারা জানিয়ে দিয়েছেন।
গতমঙ্গলবার রাতে যখন মেয়র আরিফের বাসার অফিসে নিরাপত্তার থাকা আনসার সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হয় তখনও তার ঘনিষ্ঠজন বিএনপি নেতারা ছুটে গিয়েছিলেন। মধ্যরাত পর্যন্ত তারা আরিফের বাসায় অবস্থান করেন। এছাড়া পদে পদে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন আরিফ। আর এই বাধা তাকে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। সর্বশেষ তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা আনসার সদস্যদের সরিয়ে নেয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না তারা।
আরিফ নিজেও ভোট নিয়ে নানা শঙ্কায় রয়েছেন। এরই মধ্যে গণমাধ্যমের কাছে ভোটের পরিবেশ নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। কিছু প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন না তিনি। তবে পরিস্থিতি বলছে, হাওয়া প্রতিকূলেই থাকবে। ইভিএম-এ ভোট। ইভিএম নিয়ে শুরু থেকেই প্রতিবাদী আরিফ। এ ভোট ব্যবস্থায় আস্থার সংকট আছে তার।
সিলেটের মানুষ ইভিএমে ভোট দিতে অভ্যস্থ নয় বলে জানিয়েছেন আরিফ। অনেকেই ইভিএম ভোটের পদ্ধতি জানেন না। ৬ মাস আগে থেকে এ ব্যাপারে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করলে ভালো হতো। এখন তো ট্রেনিংয়ের সময়ও নেই। পরিবেশ নিয়েও শঙ্কায় আরিফ। গতবুধবার নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলনে আরিফ জানিয়েছেন- একটি মামলায় সিলেটে প্রায় ১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বহু নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এতে অনেক নেতাকর্মী বাড়িঘরে থাকতে পারেননি।
এ ধরনের পরিস্থিতি ঘটতে থাকলে নির্বাচনের সুষ্টু পরিবেশ থাকবে না। মাঠ নিরপেক্ষ না হলে কিছু করার থাকবে না বলে আশঙ্কা মেয়র আরিফের। মেয়র আরিফের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন সিলেটের বিএনপি দলীয় কাউন্সিলররাও। তাদের সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে মেয়র আরিফের সিদ্বান্তের উপর। বিএনপি দলীয় কাউন্সিলরদের মতে- সিলেটে জনগণের সঙ্গে বিএনপি’র সম্পৃক্ততা রয়েছে। আর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কারণে এই জনসম্পৃক্ততা বাড়ছে। এতে করে সিলেটেও দলের অবস্থান সুসংহত।
সিলেট নিউজ ২৪